E-copy:Students copy in a digital way!

আজকাল সব কিছু ডিজিটাল হয়ে যাচ্ছে - এমনকি নকলও!
যেহেতু শিক্ষার্থীরা এখন বাসা এবং বিদ্যালয় উভয় স্থানেই অত্যাধুনিক গ্যাজেট ব্যবহার করবার সুবিধা পাচ্ছে, শিক্ষাবিদেরা নতুন ধরণের নকলের পন্থাগুলোর খোঁজ করছে। যখন ঠিক মত পড়াশোনা করছেনা তখন কোমল পানিয়ের লেবেলে প্রশ্নের উত্তর ডিজিটালভাবে বসানো থেকে শুরু করে পরীক্ষার উত্তর টেক্সট মেসেজের মাধ্যমে একে অপরকে জানানো এবং পরীক্ষার ছবি তুলে পাঠানো ইত্যাদি নানা রকম ফন্দি-ফিকির খুঁজে বেড়াচ্ছে শিক্ষার্থীরা।


শুধুমাত্র ইউটিউবেই রয়েছে ডজন খানেক ভিডিও যেখানে ধাপে ধাপে শেখানো হয়েছে: তিন মিনিট ব্যাপী একটি ভিডিওতে দেখানো হয়েছে কোমল পানীয়ের বোতলের খোলসটিকে কিভাবে ডিজিটালভাবে স্ক্যান করে ছবি এডিটিং করবার সফটওয়্যার ব্যবহারের মাধ্যমে পুষ্টি সংক্রান্ত যে তথ্যগুলো রয়েছে তা মুছে দিয়ে সেখানে প্রশ্নের উত্তর অথবা নানারকম সূত্র লিখে রাখার পদ্ধতি। এই ভিডিওটি প্রায় ৭০ লক্ষের মত হিট পেয়েছে!
ক্যালিফোর্নিয়ার মিশন ভিয়েজ-এ অবস্থিত দক্ষিণ অরেঞ্জ কমিউনিটি কলেজ ডিসট্রিক্টের প্রযুক্তি এবং শিক্ষা পরিসেবার উপাচার্য রবার্ট ব্রামুচি বললেন, "এ মুহূর্তে নকলের এক মহামারী চলছে। আমরা এদেরকে ধরছি না। আমরা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত নই যে এ ধরণের কাজ ঘটছে।"
স্পাইচিটস্টাফ.কম নামক সাইটের মত কয়েকটি নিরাপত্তা সংক্রান্ত কোম্পানি এক রাতের মধ্যে ডাকের মাধ্যমে আপনার কাছে পৌঁছে দিবে একটি কিট যা মোবাইলফোন অথবা আইপডকে হ্যান্ডস-ফ্রি চিটিং ডিভাইসে পরিণত করবে, সাথে থাকছে ক্ষুদ্র একটি তারবিহীন ইয়ারবাডস। এই ইয়ারবাডসের সাহায্যে আপনি গোপনে পরীক্ষার সময়ে কোন বন্ধুকে ফোন করে তার কাছ থেকে উত্তর সংগ্রহ করতে পারবেন।
কমন সেন্স মিডিয়া নামক একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠান এক সমীক্ষার মাধ্যমে জানতে পেরেছে ১৩ থেকে ১৭ বছর বয়সী কিশোর-কিশোরীদের ৩৫ শতাংশ তাদের মোবাইল ফোন ব্যবহার করে নকল করেছে। ৫২ শতাংশ বলেছে তারা কোন না কোন ধরণের নকল করেছে ইন্টারনেটের সাহায্য নিয়ে, আর বেশি ভাগই এটা অত্যন্ত সাধারণ একটা ঘটনা বলে মনে করছে। এর মাঝে শুধুমাত্র ৪১% মনে করে পরীক্ষার সময় যেন দেখতে পায় সেইজন্য তাদের মোবাইলফোনে নোট সংরক্ষণ করাটা "গুরুতর অপরাধ" হিসবে দেখে থাকে। প্রতি চার জনে একজন (২৩%) একে নকল করা বলে মনেই করে না।
২০০৭ সালে দুই চীনা ছাত্র বেতারযন্ত্র ব্যবহার করে নকল করে তাদের ইংরেজি পরীক্ষায় কিন্তু শেষ পর্যন্ত ক্ষুদ্র এই ইয়ারবাডস কান থেকে বের করবার জন্য তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে ডিজিটাল ডিভাইস নকল করবার প্রবণতা বাড়িয়ে দেয় নি। বরং এগুলো ফলে নকল ধরাটা আরো কঠিন হয়ে গিয়েছে।
তবে এ সকল কারণে কর্তৃপক্ষ নকল রোধে কঠোর মনোভাব গ্রহণ করা শুরু করেছে। নিউ ইউর্কের পুলিশ ২০ জন কিশোরকে গ্রেপ্তার করে তাদের স্যাট পরীক্ষায় নকল করবার অপরাধে।
নকল ধরার ব্যাপারটিকে নোবেল বিজয়ী মনোবৈজ্ঞানিক ড্যানিয়েল কাহনম্যান উল্লেখ করেছেন "জ্ঞানীর পক্ষপাত" হিসেবে। নকল যে ঘটছে শিক্ষকেরা যদি তা চোখের সামনে দেখতে না পান, তাহলে তারা বিশ্বাস করবেন না যে এটা ঘটছে আর তাই একে প্রতিরোধ করবার ব্যবস্থাও তারা গ্রহণ করবেন না।
কিন্তু ব্রামুচি'র মতে শিক্ষাবিদেরা নকল ধরবার ক্ষেত্রে একদম যাচ্ছেতাই। তার এ কথার প্রমাণ দিতে গিয়ে তিনি জানান, কয়েক বছর আগে তিনি কয়েক দল শিক্ষার্থীকে জড়ো করেন একটি মক পরীক্ষা নেবার জন্য যেখানে তিনি তাদেরকে নির্দেশ দেন নানা পদ্ধতি ব্যবহার করে নকল করবার জন্য। আর এই নকল হবে দক্ষিণ অরেঞ্জের অধ্যাপকদের সামনে, যারা এই পরীক্ষা পর্যবেক্ষণ করবেন এবং নোট নিবেন।
ব্রামুচি বলেন, "শিক্ষার্থীরা যে সকল পদ্ধতি ব্যবহার করে নকল করছিল তারা এক তৃতীয়াংশই তারা ধরতে পারে নি এটা জানা সত্ত্বেও যে তারা নকল করছে এবং সব কিছু ঘটছে তাদের চোখের সামনে।"

Comments

Popular posts from this blog

পড়াশোনা করতে চান এম.আই.টি. তে?

বাংলাদেশ এ তৈরি হচ্ছে প্রথম ডিজিটাল ম্যাপ!!!

আপনার কম্পিউটারটি কি সুস্থ আছে!!!